শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মেরিন ড্রাইভে মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে বিদেশী নাগরিক নিহত (আপডেট) পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র-গোলা সহ মহেশখালীর বাহিনীর প্রধান জিয়া ও সহযোগী গ্রেপ্তার নাফনদী থেকে ট্রলার সহ ৬ মাঝি অপহরণ নিয়ে ধুম্রজাল ওপারে আবারও মুহুর্মুহু বিস্ফোরণ; এবার আরাকান আর্মির বিপক্ষে স্বশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠি বিদেশ যেতে ভাইঝিকে অপহরণ, চাচা সহ গ্রেপ্তার ২ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ আটক ৩ এবার রড সিমেন্ট বোঝাই ২ ট্রলার সহ ৬ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরকান আর্মি  টেকনাফে ইয়াবা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক ১ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হ্যান্ডগ্রেনেড, দেশিয় বন্দুক ও গুলিসহ আরসা’র সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার টেকনাফে আইস ও ইয়াবা সহ আটক ১

মিতু হত্যা: নিজের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন নিয়ে বাবুলের নারাজি

বিডিনিউজ : স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় নিজের করা মামলায় দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে আদালতে নারাজি আবেদন করেছেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে আবেদনটি করা হয় বলে তার আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী জানান।

তিনি বলেন, নারাজি আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছে। ২৭ অক্টোবর বাদির উপস্থিতিতে আবেদনের শুনানি হবে।

নারাজির আবেদনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই মামলায় (বাবুলের করা মামলায়) ৫১ জনের বেশি সাক্ষীর ১৬১ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। কোনো সাক্ষী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেননি; কোনো বক্তব্য দেয়নি।

“দুজন সাক্ষী, যাদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সাড়ে চার বছর পর ওই দুজনকে ধরে এনে তার (বাবুলের) বন্ধু বানালেন। তারা বলেছে, বাবুল আক্তার একলাখ ২৫ হাজার টাকা লেনদেন করেছে। এটার উপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেন। কাদের বাঁচানোর জন্য, সেটা আমাদের দেখতে হবে।”

ইফতেখার সাইমুল বলেন, “বাবুল আক্তার মহলবিশেষের ষড়যন্ত্রের শিকার। ইতিপূর্বে তিনি স্বর্ণের চোরাকারবারি ও কালোবাজারিদের ধরেছেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ করেছেন। আমরা মনে করি, একটি বিশেষ মহল এবং এই সিন্ডিকেট এরা সবাই মিলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে।”

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে যোগ দিতে ওই সময় ঢাকায় ছিলেন তখনকার পুলিশ সুপার বাবুল। তার ঠিক আগেই চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশে ছিলেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন বাবুল আক্তার নিজেই।

আদালতের আদেশে পরে মিতু হত্যা মামলা যায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হাতে। হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাঁচ বছরের মাথায় গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম পিবিআই কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়।

এর পরদিন ১২ মে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, মিতু হত্যার সঙ্গে তার স্বামী বাবুল আক্তারের ‘সম্পৃক্ততার প্রমাণ’ পেয়েছেন তারা।

ঢাকায় ওই সংবাদ সম্মেলনের পরপরই চট্টগ্রামে বাবুলের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন চট্টগ্রাম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় সেদিন জমা দিয়েছিলেন পিবিআইর পরিদর্শক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সন্তোষ কুমার চাকমা।

এরপর ওইদিনই পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন একটি হত্যা মামলা করেন। যাতে বাবুলকে প্রধান আসামিসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়।

গত ২৩ অগাস্ট বাবলু আক্তারের করা ওই মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে আসামিদের দেওয়া ১৬১ ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দি এবং চূড়ান্ত প্রতিবেদনের নকলের (কপি) জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার জাহানের আদালতে আবেদন করা হয়েছিল।

বাবুলের পক্ষে করা সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং ১৬১ ও ১৬৪ ধারার জবানবন্দিগুলোর নকল সরবরাহের আদেশ দেন। একইদিন বাবুলের করা মামলার নথিপত্র বিচারিক হেফাজতে রাখতে তার আইনজীবীর করা আবেদনও মঞ্জুর করেন আদালত।

বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তার আইনজীবী বলেন, “অথচ এর আগে সাড়ে চার বছর তদন্ত হলো। একজন এডিশনাল এসপি, একজন এএসপি, একজন ইন্সপেক্টর তদন্ত করেছেন। এত সিনিয়র অফিসাররা এ ধরনের কোনো তথ্য পাননি। উনি (আইও) মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে সব তথ্যে পেয়ে গেলেন! এর উপর চূড়ান্ত প্রতিবেদনও দিয়ে দিলেন।”

মিতুর বাবার করা মামলায় গ্রেপ্তার বাবুল আক্তার এখন ফেনী কারাগারে আছেন।

এদিকে মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে মিতু হত্যা মামলার আসামি এহতেশামুল হক ভোলার করা সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

মিতুর বাবার করা মামলার আসামি ভোলা উচ্চ আদালত থেকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর চার সপ্তাহের জামিন নেন। সময় শেষ হওয়ায় গত সোমবার তিনি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন চান। বৃহস্পতিবার ধার্য দিনে এ বিষয়ে শুনানি হয়।

বাবুল ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তার ‘সোর্স’ কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা, মুছার ভাই সাইদুল আলম শিকদার ওরফে শাক্কু, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান ও খায়রুল ইসলাম কালু।

বাবুলকে পিবিআই হেফাজতে নিয়ে পাঁচ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২৯ মে বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেনী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888